অনলাইন ডেস্ক:
ময়মনসিংহের ভালুকায় ট্রাক্টর দিয়ে জমি চাষের পর গরু না থাকায় স্ত্রী ও ছেলেকে দিয়ে ‘মই টানিয়ে’ ক্ষেত প্রস্তুত করছেন কৃষক আবু বক্কর সিদ্দিক। এই কৃষক উপজেলার হবিরবাড়ি ইউনিয়নের ছোট কাশর এ’লাকার বাসিন্দা। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ছয় সদস্যের সংসার তার।”
এক মেয়ে ও তিন ছেলের জনক আবু বক্করের বড় ছেলে বিয়ে করে আলা’দা সংসার করছেন।’ একমাত্র মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। মেজ ছেলে গাজী’পুরে একটি পোশাক কার’খানায় চাকরি করেন। বর্তমানে ছোট ছেলে আর স্ত্রীকে নিয়ে তার সংসার।’
বৃহস্পতিবার (৭ জানুয়ারি) সরেজমিনে গিয়ে দেয়া যায়, প্রথমে ট্রাক্টর দিয়ে জমি চাষ করিয়েছেন কৃষক আবু বক্কর।” তবে, জমি সেই সমান করার জন্য কোনো গরু না থাকায় সেই কাজ’টি স্ত্রী ও ছেলেকে নিয়ে করছেন তিনি।
আবু বকর জানান, ৩৫ শতাংশ জমি ট্রাক্টর দিয়ে হাল চাষ করিয়েছেন। কিন্তু টাকার “অভাবে’ কয়েক’দিন ধরে ক্ষেতে মই দিতে পারছিলেন না। অনেক জায়গায় টাকা ধার চেয়েও ব্যর্থ হয়েছেন। পরে নিরুপায় হয়ে স্ত্রী-সন্তানকে দিয়ে মইয়ের রশি টানাচ্ছেন এবং নিজে মইয়ের পেছনে ধরে সহ’যোগিতা করছেন।
আবু বকর সিদ্দিকের স্ত্রী মমতাজ বেগম বলেন, ছয় সদস্যের সংসারে উপার্জনের লোক নেই। তাই কিছু টাকা বাঁচানোর জন্য স্বামী’কে সহযোগিতা করছেন।’ কারও কাছে টাকা ধার চেয়ে না পাওয়া এবং পেলেও সময়মতো পরিশোধ করতে না পারলে অনেক কথা শুনতে হয়। তাই কারও কাছে মাথা নত না করে নিজের কাজ নিজে করাই উত্তম বলে মনে করেন মমতাজ বেগম।”
বাবার কাজে স’হায়তা করা মাহাদী হাসান সুমন দশম শ্রেণির ছাত্র। সুমন বলে, করোনার জন্য স্কুল বন্ধ। তার বাবা মূলত কৃষক। এখন বাবার বয়স হয়েছে তাই কাজও ঠিক’মতো করতে পারেন না।’ এলাকায় কাজের লোক পেলেও পারিশ্রমিক দিতে হয় বেশি। তাই মাকে নিয়েই কাজে নেমেছে সে।’
ভালুকা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নারগিস আক্তার বলেন, অভাবের তাড়নায় স্ত্রী-সন্তান’কে দিয়ে হাল চাষ করানো দুঃখ’জনক। তাদের সহযোগিতার কথা জানিয়েছেন তিনি।
এ বছর ভালুকা উপজেলায় ২১ হাজার হেক্টর জমিতে ফসল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। তবে ফ্যাক্টরির ময়লার কারণে অ’নেকের ফসলই নষ্ট হচ্ছে। উৎপাদিত ফসল খেয়ে অনেকের রোগও হচ্ছে। পরি’কল্পিত ভাবে ফ্যাক্টরির কার্যক্রম পরি’চালনা করার জন্য সরকারের সহযোগিতা প্রয়োজন বলে মনে করেন নারগিস আক্তার।”
Discussion about this post